Wednesday, March 29, 2017

বাংলাদেশের বিবাহ আইন সমূহ:

বাংলাদেশের বিবাহ আইন সমূহ:



প্রত্যেক সাবালক নাগরিকের বিয়ে করার পূর্ণ অধিকার রয়েছে বাংলাদেশের সংবিধান ও আইন অনুসারে। বাংলাদেশের আইন অনুসারে ছেলেদের বিয়ের সর্বনিম্ন বয়স নির্ধারন করা হয়েছে ২১ বছর এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ১৮ বছর। এর কম বয়সে ছেলে কিংবা মেয়ের বিয়ে দেওয়া হলে সেটি বাল্য বিবাহ হিসেবে বিবেচিত হয়। বাল্যবিবাহ আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। ইউনিভার্সাল ডিক্লারেশন অফ হিউমান রাইটসের ১৬(এ) অনুচ্ছেদের বিধানমতে, বিয়ে ও বিয়ে বিচ্ছেদ নারী ও পুরুষের একটি অধিকার৷


আপনারা কি একজন অপরজনকে ভালোবাসেন, বিবাহ করতে চান তবে যেনে নিন বিবাহ আইন সমূহ: অথবা পালিয়ে বিবাহ করতে চাইছেন তবে জেনে নিন কোর্ট ম্যারেজ আইন সম্পর্কে https://play.google.com/store/apps/details?id=com.blogspot.gcookng.marriage

মুসলিম আইন:

বাংলাদেশে ১৯৩৯ সালের মুসলিম বিবাহ বিচ্ছেদ আইন, ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন, ১৯২৯ সালের বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ১৯৭৪ ও ১৯৭৫ সালের মুসলিম বিবাহ ও তালাক (রেজিস্ট্রেশন) আইন, ১৯৮০ সালের যৌতুক নিরোধ আইন প্রভৃতি আইনের সমন্বিত নিয়ম-ধারার অধীনে মুসলমান সমাজে আইনী বিয়ে ও আনুষঙ্গিক কার্যক্রম সম্পাদিত হয়। অবশ্য এই যাবতীয় আইনই ইসলামী শরীআতের অন্তর্বর্তি এমনটা বলা যায় না, বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে ইসলামী শরীয়াহ পরিপন্থি অনেক বিধানও এতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

মুসলিম আইন অনুসারে বিয়ে একটি ধর্মীয় দায়িত্বই কেবল নয়, একটি দেওয়ানী চুক্তিও। এই আইন অনুসারে একটি পূর্ণাঙ্গ বিয়ের জন্য কতিপয় শর্ত পূরণ করতে হয়:
উভয়পক্ষের ন্যুনতম বয়স
পারস্পরিক সম্মতি
দেনমোহর

সুস্থ মস্তিষ্কের প্রাপ্তবয়স্ক ২ জন সাক্ষী


আইনী নিবন্ধন:

আইনী শর্তানুসারে বরের বয়স কমপক্ষে ২১ এবং কনের বয়স কমপক্ষে ১৮ হতে হবে। এছাড়া বর-কনেকে সুস্থ মস্তিষ্কের হতে হবে। অতঃপর নারী ও পুরুষকে ইসলামী বিধান অনুসারে উভয়পক্ষের সাক্ষীর সামনে একজন উকিল বা কাজীর উপস্থিতিতে সম্মতি জানাতে হয় (মুসলিম আইন ও ইসলামী শরীয়াতে কনের প্ররোচনাহীন স্বেচ্ছা-সম্মতি বাধ্যতামূলক)। দুজন সুস্থ মস্তিষ্কের প্রাপ্তবয়স্ক সাক্ষী উপস্থিত থাকা বাধ্যতামূলক এবং একজন পুরুষের সাক্ষ্য দুজন নারী সাক্ষ্যের সমান নয়। একজন নারীকে বিয়ে করতে হলে “দেনমোহর” দেয়া বাধ্যতামূলক। দেনমোহর হলো একটি আর্থিক নিশ্চয়তা (কিছু পরিমাণ অর্থ কিংবা সম্পত্তি), যার বিনিময়ে একজন নারী তার বিবাহিত পুরুষ সঙ্গীর জন্য হালাল বা সিদ্ধ হোন। ইসলাম ধর্ম অনুসারে এই দেনমোহর বিয়ের সময়ই সম্পূর্ণ আদায় করে দিতে হয়, দেনমোহর মাফ হয় না। মুসলিম আইন অনুসারে বিয়ের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক এবং এই দায়িত্ব পুরুষের। এই দায়িত্বের অন্যথায় ২ বছর পর্যন্ত বর্ধনযোগ্য মেয়াদের বিনা শ্রম কারাবাস, বা ৩,০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারে। একজন বিবাহিত নারী তার স্বামীর সেবা এবং আনুগত্য করবেন, আর বিবাহিত পুরুষ তার স্ত্রীর সম্পূর্ণ দেখভাল করবেন, যাবতীয় দায়িত্ব পালন করবেন এবং স্ত্রীর সুখ-শান্তি নিশ্চিত করবেন।



নিবন্ধন প্রক্রিয়া:

মুসলিম বিবাহ এবং তালাক (নিবন্ধন) আইন , ১৯৭৪ অনুসারে সম্পাদিত প্রতিটি বিবাহ নিবন্ধনকৃত হতে হবে এবং এ উদ্দেশ্যে সরকার বিবাহ নিবন্ধক নিয়োগ করবে। নির্দেশিত পদ্ধতিতে প্রত্যেক বিবাহ নিবন্ধক বিবাহ এবং তালাকের জন্য পৃথক নিবন্ধন বহি পরিচালনা করবে। বিবাহ নিবন্ধক হিসেবে নিয়োগের যোগ্যতা, বিবাহ নিবন্ধককে প্রদেয় ফি এবং এ সম্পর্কিত অন্য যে কোন বিষয় নির্ধারণ করার জন্য মুসলিম বিবাহ এবং তালাক (নিবন্ধন) বিধি, ১৯৭৫ তৈরী করা হয়। বিবাহ নিবন্ধক হিসেবে লাইসেন্স পেতে ইচ্ছুক প্রার্থীকে অবশ্যই মাদ্রাসা বোর্ড হতে আলিম সার্টিফিকেট প্রাপ্ত এবং বয়স অবশ্যই ২১ হতে ৪০ বছরের মধ্যে হতে হবে। বিবাহ নিবন্ধক নিয়োগের আবেদন নির্দেশিত ফরম -এ উপদেষ্টা কমিটির সচিব বরাবরে করতে হবে। বিবাহ নিবন্ধক উপদেষ্টা কমিটি নিবার্চনে সরকারকে উপদেশ প্রদান করবে। বিবাহ নিবন্ধকের চাকুরি কোন সরকারী চাকুরি নয়। একজন বিবাহ নিবন্ধক তাঁর বয়স ৬৫ বছর পূর্ণ হওয়া পযর্ন্ত স্বীয় পদে বহাল থাকবেন।



বিবাহ এবং তালাক নিবন্ধন –এর জন্য নির্ধারিত ফি:

বিয়ের দেনমোহরের পরিমাণের উপর রেজিস্ট্রেশন ফি ধার্য্য হয়। ধার্য্যকৃত দেনমোহরের প্রতি হাজার বা তার অংশবিশেষের জন্য ১০ টাকা রেজিস্ট্রেশন ফি। তবে রেজিস্ট্রেশন ফি এর পরিমান ১০০ টাকার কম হবে না এবং ৪০০০ টাকার উপরে হবে না। যেমনঃ কারো বিয়ের দেনমোহর ১০,০০০ টাকা হলে ফি হবে ১০০ টাকা, ১০,৫০১ টাকা হলে ১১০ টাকা (প্রতি হাজারের অংশবিশেষের জন্যও ১০ টাকা), ১১,০০০ টাকা হলেও ১১০ টাকা, দেনমোহরের পরিমান ৫০০,০০০ টাকা হলেও ৪০০০ টাকা (সর্বোচ্চ পরিমান ৪০০০ টাকা) আবার দেনমোহর ১০০০ টাকা হলেও ফি দিতে হবে ১০০ টাকা (যেহেতু সর্বনিম্ন পরিমান ১০০ টাকা)। একজন বিবাহ নিবন্ধক একটি তালাক নিবন্ধনের জন্য দুইশত টাকা ফি হিসেবে গ্রহণ করবে। উল্লেখ্য রেজিস্ট্রেশন ফি পরিশোধের দায়িত্ব বরপক্ষের। সরকার সময়ে সময়ে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই ফি পরিবর্তন ও ধার্য্য করে থাকে।


বিবাহ নিবন্ধন না করার শাস্তি:

মুসলিম আইনে রেজিস্ট্রেশন না করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। রেজিস্ট্রেশন না করলে ২ বৎসর বিনাশ্রম কারাদন্ড ও ৩০০০ টাকা জরিমানা বা উভয়দন্ড হতে পারে তবে বিয়েটি বাতিল হবে না। খ্রিস্টান আইনে রেজিস্ট্রেশন বিয়ের অন্যতম অংশ ফলে রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক। এছাড়া হিন্দু, বৌদ্ধদের বিয়ে রেজিস্ট্রেশনের নিয়ম এখনো চালু হয় নি।। বিয়ের অনুষ্ঠানে বিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা উত্তম তবে কোন কারণে তা না হলে ৩০ দিনের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।


হিন্দু বিবাহ আইন:

হিন্দু শাস্ত্রমতে, বিয়ে শুধুই চুক্তি নয়, বরং একটি ধর্মীয় বাধ্যবাধকতা। হিন্দু আইন মূলত হিন্দু ধর্মশাস্ত্রেরই প্রতিরূপায়ন। শাস্ত্রানুযায়ী পুরুষদের অবশ্য পালনীয় ১০টি ধর্মীয় কর্তব্যের (Ten sacraments) অন্যতম হলো বিয়ে। হিন্দু আইনের দৃষ্টিতে বিয়ে হলো, ধর্মীয় কর্তব্য সম্পাদনের উদ্দেশ্যে স্বামী-স্ত্রীর পবিত্র মিলন। হিন্দু বিয়ের অন্যতম উদ্দেশ্য পুত্রসন্তানের জন্ম দেয়া, কেননা শাস্ত্রানুযায়ী পুত্রসন্তানই বংশের ধারা বজায় রাখতে ও পিণ্ড দান করতে পারে। হিন্দু আইনানুযায়ী কনের বাবা-মা বরের হাতে কনেকে সম্পূর্ণভাবে ন্যস্ত করেন। সনাতন হিন্দু আইনে কনের সম্মতি কিংবা অসম্মতি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হয় না এবং বিবাহ-বিচ্ছেদ ও পূণর্বিবাহ স্বীকৃত নয়, এমনকি ধর্ম পরিবর্তন, বর্ণচ্যুতি, ব্যাভিচার কিংবা বেশ্যাবৃত্তিও বিবাহ-বিচ্ছেদের কারণ হতে পারে না। হিন্দু শাস্ত্রানুযায়ী যেহেতু বিয়ে কোনো চুক্তি নয়, তাই বিয়ের জন্য সাবালকত্ব বিবেচিত হয় না- এই নিয়ম সনাতন হিন্দু আইনে অনুসৃত এবং বাংলাদেশী হিন্দুগণ এই আইন মেনে চলেন। হিন্দু আইনে বিয়ে রেজিস্ট্রেশনের কোনো বিধান নেই। হিন্দু আইন অনুযায়ী একজন নপুংসকও বিয়ে করতে পারে। বাংলাদেশের হিন্দু আইনে বর্ণপ্রথা রয়েছে অর্থাৎ আইনগতভাবে বর-কনেকে অবশ্যই সমগোত্রীয় হতে হবে। ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশে হিন্দু আইনে ‘বিধবা বিবাহ’ আইনসম্মতভাবে স্বীকৃত, তবে বাস্তবে এর প্রয়োগ সচরাচর দেখা যায় না। হিন্দু আইনানুযায়ী স্ত্রীর, স্বামীর প্রতি অনুগত থাকতে হবে, আর স্বামীকে তার স্ত্রীর সঙ্গে বাস করতে ও ভরণপোষণ দিতে হবে। বাংলাদেশের হিন্দু নারীরা ‘হিন্দু ম্যারিড উইমেনস রাইট টু সেপারেট রেসিডেন্স অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স অ্যাক্ট ১৯৪৬’ অনুযায়ী কিছু কিছু ক্ষেত্রে পৃথকভা বসবাস করার ও ভরণপোষণ পাবার অধিকার পান, যেমন: যদি স্বামী কোনো সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হন এবং ঐ রোগ স্ত্রীর দ্বারা সংক্রমিত না হয়ে থাকে, কিংবা যদি স্বামী তার স্ত্রীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন এবং ঐ খারাপ ব্যবহার এমন হয় যে, তা স্ত্রীর জীবনের প্রতি হুমকিস্বরূপ হয়; কিংবা স্বামী যদি দ্বিতীয় বিয়ে বা পুনরায় বিয়ে করেন; কিংবা স্বামী যদি স্ত্রীকে তার সম্মতি ছাড়া ত্যাগ করেন; কিংবা স্বামী যদি অন্য ধর্ম গ্রহণ করেন অথবা অন্য কোনো আইনগত কারণে স্ত্রী পৃথকভাবে বসবাস ও ভরণপোষণ লাভ করার অধিকারী হন।


বিশেষ বিবাহ আইন

বিশেষ বিবাহ আইনের অধীন বিয়ে করতে চাইলে পাত্র ও পাত্রীকে একজন আইনজীবীর শরণাপন্ন হতে হবে ৷ আইনজীবীর তত্ত্বাবধানে প্রস্তুতকৃত হলফনামায় পাত্র-পাত্রী স্বাক্ষর দানের পর ওই হলফনামা নোটারি পাবলিক কর্তৃক নোটরাইজড করতে হবে ৷ হলফনামায় অবশ্যই বিশেষ বিবাহ আইনের অধীন বিয়ে শব্দগুচ্ছ লিখতে হবে ৷ অতঃপর সরকার অনুমোদিত বিশেষ বিবাহ রেজিস্ট্রারের কাছে নির্ধারিত ফরম পূরণপূর্বক ৩ জন সাক্ষীর উপস্থিতিতে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে হয় ৷ উল্লেখ্য, বিশেষ বিবাহ আইনে বিয়ের ক্ষেত্রে যৌতুক প্রথা এবং আমন্ত্রিত অতিথিদের খাওয়া-দাওয়ার বাহুল্যতা নেই৷


বিশেষ বিবাহ আইন:

১৮৭২ সালের বিশেষ বিবাহ আইনানুসারে যেসব ব্যক্তি খ্রিস্টান, ইহুদি, হিন্দু, মুসলিম, পার্সি, বৌদ্ধ, শিখ বা জৈন ধর্ম গ্রহণ করেননি, তাদের জন্য বিয়ের একটি ধরন নির্ধারণ করা এবং যেসব বিয়ের বৈধতা সম্পর্কে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে, সেসব সুনির্দিষ্ট বিয়ের বৈধতা প্রদান করা সমীচীন ৷ বিশেষ বিবাহ আইনে বিয়ে অনুষ্ঠানের শর্তাবলী বিশেষ বিবাহ আইনের ২ ধারা মোতাবেক বিয়ে অনুষ্ঠানের শর্তাবলী নিম্নরূপ- বিয়ের সময় বিয়ের পক্ষগণের মধ্যে কারোই কোনও জীবিত স্বামী বা স্ত্রী থাকতে পারবে না, গ্রেগরিয়ান পঞ্জিকা অনুসারে পুরুষ ব্যক্তির বয়স ১৮ বছর এবং মহিলার বয়স ১৪ বছর পূর্ণ হতে হবে, পক্ষগণ রক্ত সম্পর্কে বা বৈবাহিক সম্পর্কে সম্পর্কযুক্ত হতে পারবেন না, যাতে তাদের একজনের ওপর প্রযোজ্য আইন দ্বারা ওই বিবাহ অবৈধ হতে পারে৷ বিয়ে যেভাবে সম্পন্ন করতে হবে বিশেষ বিবাহ আইনের ১১ ধারা মোতাবেক বিয়ে সম্পন্ন করতে হবে রেজিস্ট্রার এবং ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষরদানকারী তিনজন সাক্ষীর সম্মুখে৷ উল্লেখ্য, পক্ষগণকে রেজিস্ট্রার ও সাক্ষীগণের উপস্থিতিততে বলতে হবে ‘আমরা পরস্পর পরস্পরকে আইনসঙ্গত স্ত্রী অথবা স্বামী হিসেবে গ্রহণ করলাম ৷’ ১১ ধারার বিধানাবলী বাধ্যতামূলক করা হয়েছে [১৮ ডিএলআর (১৯৬৬) পাতা ৫০৯] ৷সহ-উত্তরাধিকারিত্বের ওপর কতিপয় বিয়ের ফলাফল হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ বা জৈন ধর্মাবলম্বী কোনও যৌথ পরিবারের কোনও সদস্যের এ আইন মোতাবেক বিয়ে হলে অনুরূপ পরিবার থেকে তার বন্ধন ছিন্ন হয়েছে বলে গণ্য হবে (২২ ধারানুসারে) ৷ বাংলাদেশে বিশেষ বিবাহ আইন বাংলাদেশের কোনও মুসলিম, খ্রিস্টান, ইহুদি, পার্সি, বৌদ্ধ, শিখ বা জৈন নন বা তাদের একজন যে কোনও এটি বা অন্য ধর্মে বিশ্বাসী তাদের মধ্যে বিয়ের ব্যবস্থা করতে হলে বিশেষ বিবাহ আইনের অধীন উপযুক্ত নিয়মাবলী অনুসরণ করা বাধ্যতামূলক ৷ এক্ষেত্রে একজন আইনজীবী কর্তৃক হলফনামা সম্পাদনের পর ওই হলফনামা নোটারাইজড করে বিশেষ বিবাহ রেজিস্ট্রারের উপস্থিতিতে সমুদয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে হবে ৷


বিবাহে সম্পত্তি প্রদানের অধিকার ও শাস্তি:

সম্মতি ছাড়া বিয়ে হলে একজন নারী ১৯৩৯ সালের মুসলিম আইন অনুযায়ী বিবাহ বাতিল অনুযায়ী প্রতিকার পেতে পারে। এই আইনে মেয়েটির অধিকার সুরক্ষিত আছে। কোন নারীর ১৮ বছর পূর্ণ না হলে এবং তার সম্মতি ছাড়া বিয়ে হলে তিনি মুসলিম বিবাহ বাতিল আইন, ১৯৩৯ অনুযায়ী আদালতে বিয়ে বাতিলের আবেদন করতে পারেন তবে এক্ষেত্রে দুটি শর্ত অবশ্যই পূরণ করতে হবে-
মেয়েটি যদি স্বামীর সাথে দাম্পত্য সম্পর্ক স্থাপন না করে অর্থাৎ সহবাস না করে। মেয়েটির বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার পর এবং ১৯ বছর পার হওয়ার আগে বিয়েকে অস্বীকার করতে হবে। দন্ডবিধি, ১৮৬০ ধারা ৩৬৬: যে ব্যক্তি কোন নারীকে তার ইচ্ছার বিরু্দ্ধে –
কোন ব্যক্তিকে বিয়ে করতে বাধ্য করা যেতে পারে এ রূপ অভিপ্রায়ে বা তাকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোন ব্যক্তিকে বিয়ে করতে বাধ্য করার সম্ভাবনা রয়েছে জেনে কিংবা তাকে অবৈধ যৌন সহবাস করতে বাধ্য বা প্রলুব্ধ করার উদ্দেশ্যে অথবা তাকে অবৈধ যৌন সহবাস করতে বাধ্য বা প্রলুব্ধ করার সম্ভাবনা রয়েছে জেনে অপহরণ বা হরণ করে সে ব্যক্তি সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত কারাদন্ড এবং অর্থদন্ডে দন্ডনীয় হবে। এবং যে ব্যক্তি কোন নারীকে এই বিধিতে বর্ণিত অপরাধমূলক ভীতিপ্রদর্শন বা ক্ষমতার অপব্যবহারের সাহায্যে বা বাধ্যবাধকতার অন্য কোন উপায়ে, অন্য কোন ব্যক্তির সাথে অবৈধ যৌন সহবাস করতে বাধ্য বা প্রলুব্ধ করা যেতে পারে এই উদ্দেশ্যে অথবা তাকে অন্য কোন ব্যক্তির সাথে অবৈধ যৌন সহবাস করতে বাধ্য বা প্রলুব্ধ করা যেতে পারে জেনে তাকে কোন স্থান হতে গমন করতে প্রলুব্ধ করে সে ব্যক্তিও একই দন্ডে দন্ডিত হবে।


বাল্য বিবাহের শাস্তি:

কোন নারীর ১৮ বছর পূর্ণ না হলে এবং তার সম্মতি ছাড়া বিয়ে হলে তিনি মুসলিম বিবাহ বাতিল আইন, ১৯৩৯ অনুযায়ী আদালতে বিয়ে বাতিলের আবেদন করতে পারেন তবে এক্ষেত্রে দুটি শর্ত অবশ্যই পূরণ করতে হবে-
মেয়েটি যদি স্বামীর সাথে দাম্পত্য সম্পর্ক স্থাপন না করে অর্থাৎ সহবাস না করে।
মেয়েটির বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার পর এবং ১৯ বছর পার হওয়ার আগে বিয়েকে অস্বীকার করতে হবে।
আইনে- শিশু বিবাহকারীর শাস্তি, বিয়ে সম্পন্নকারীর শাস্তি, অভিভাবকের শাস্তি এই তিন ধাপে বাল্যবিবাহের কথা বলা হয়েছে। শাস্তির পরিমান হলো ১মাস পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদন্ড বা ১ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় প্রকার দন্ড। শিশু বিবাহকারী পুরুষ, বিবাহ রেজিস্ট্রেশনকারী কাজী, অভিভাবকসহ বাল্যবিবাহের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এই শাস্তি ভোগ করবে। এক্ষেত্রে কোন নারীকে কারাদন্ড দেয়া যাবে না।

Share:

0 comments:

Post a Comment

recent posts

Popular Posts